অর্থনৈতিক শুমারি ২০২৪: বাংলাদেশের অর্থনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ

অর্থনৈতিক শুমারি ২০২৪ শুরু হতে যাচ্ছে। জানুন কীভাবে এই শুমারি দেশের অর্থনৈতিক কাঠামো এবং উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রভাবিত করবে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) কার্যালয়
পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ, পরিসংখ্যান ভবন

১১ ডিসেম্বর ২০২৪, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) উদ্যোগে চতুর্থ অর্থনৈতিক শুমারি শুরু হয়েছে। এই শুমারি দেশের অর্থনৈতিক কাঠামো ও প্রবণতা সম্পর্কে একটি সুনির্দিষ্ট চিত্র প্রদান করবে, যা দেশের উন্নয়ন পরিকল্পনায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

অর্থনৈতিক শুমারি: কেন এটি গুরুত্বপূর্ণ?

অর্থনৈতিক শুমারি প্রতি ১০ বছর অন্তর পরিচালিত একটি গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম। এটি দেশের অর্থনৈতিক কার্যক্রম, যেমন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, অনলাইন ব্যবসা, ছোট-মাঝারি উদ্যোগ এবং এমনকি ভ্যানগাড়ি বা হাট-বাজারে পরিচালিত ক্ষুদ্র ব্যবসার তথ্য সংগ্রহ করে।

২০২৪ সালের এই শুমারির বিশেষ দিক হল:

  1. ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার: তথ্য সংগ্রহ ও সংরক্ষণে জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সিস্টেম (GIS) এবং মোবাইল ডিভাইস ম্যানেজমেন্ট (MDM) প্রযুক্তি ব্যবহৃত হবে।

  2. বিদেশি কর্মী সংক্রান্ত তথ্য: এ বছর শুমারিতে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে কর্মরত বিদেশি কর্মীদের তথ্য সংগ্রহ করা হবে।

  3. অনলাইন ব্যবসার অন্তর্ভুক্তি: দেশে ক্রমবর্ধমান অনলাইন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোকে এবার শুমারির আওতায় আনা হয়েছে।

কিভাবে তথ্য সংগ্রহ করা হবে?

শুমারির মূল কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ৯৫,০০০ তথ্য সংগ্রহকারী মাঠপর্যায়ে কাজ করবেন। তারা দেশের প্রায় ১ কোটি ২২ লাখ অর্থনৈতিক ইউনিট থেকে তথ্য সংগ্রহ করবেন। এই ইউনিটগুলির মধ্যে অন্তর্ভুক্ত থাকবে:

  • ক্ষুদ্র, মাঝারি ও বৃহৎ শিল্প প্রতিষ্ঠান।

  • গৃহভিত্তিক ক্ষুদ্র শিল্প।

  • ক্ষুদ্র ব্যবসায়িক কার্যক্রম, যেমন দোকান, রেস্টুরেন্ট এবং মোবাইল ব্যবসা।

শুমারির লক্ষ্য ও ভবিষ্যৎ প্রভাব

এই শুমারির মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক কার্যক্রমের একটি সুনির্দিষ্ট চিত্র উঠে আসবে, যা উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণের ক্ষেত্রে সহায়ক হবে। উদাহরণস্বরূপ:

  1. উন্নয়ন পরিকল্পনা: প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে স্থানীয় এবং জাতীয় পর্যায়ে উন্নয়ন পরিকল্পনা তৈরি করা যাবে।

  2. নীতি নির্ধারণ: বিভিন্ন খাতের অবদান মূল্যায়ন করে অর্থনৈতিক নীতি নির্ধারণ সহজ হবে।

  3. শ্রম বাজার: কর্মসংস্থানের হার এবং বিভিন্ন খাতে নারী ও পুরুষের অংশগ্রহণের তথ্য জানা যাবে।

উদাহরণস্বরূপ প্রভাবিত খাতগুলো

  • শিল্প খাত: কোন কোন শিল্প খাতে বিনিয়োগ বাড়ানো উচিত তা নির্ধারণ সহজ হবে।

  • সেবা খাত: গৃহভিত্তিক সেবা এবং ক্ষুদ্র ব্যবসাগুলোর প্রবৃদ্ধি সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যাবে।

  • তথ্যপ্রযুক্তি খাত: অনলাইন ব্যবসার সুনির্দিষ্ট ডেটা পাওয়ার মাধ্যমে এই খাতকে আরও উন্নয়নের সুযোগ তৈরি হবে।

চ্যালেঞ্জ এবং উত্তরণ

শুমারির সফলতা নির্ভর করবে তথ্য সংগ্রহের নির্ভুলতা এবং সময়ানুবর্তিতার উপর। তথ্য সংগ্রাহকদের সঠিক প্রশিক্ষণ এবং প্রযুক্তির কার্যকর ব্যবহারের মাধ্যমে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব হবে।

উপসংহার

অর্থনৈতিক শুমারি ২০২৪ বাংলাদেশের জন্য একটি বড় উদ্যোগ। এটি দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক অবস্থা পর্যালোচনা এবং ভবিষ্যৎ উন্নয়নের জন্য একটি শক্তিশালী ভিত্তি প্রদান করবে। এই শুমারি সফলভাবে পরিচালিত হলে দেশের অর্থনীতি এবং জনগণের জীবনযাত্রায় ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।

সচরাচর জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন (FAQs)

অর্থনৈতিক শুমারি কী?

অর্থনৈতিক শুমারি হলো একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে দেশের সকল অর্থনৈতিক ইউনিটের তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করা হয়।

অর্থনৈতিক শুমারি ২০২৪ এর মূল উদ্দেশ্য কী?

মূল উদ্দেশ্য হলো দেশের অর্থনৈতিক কাঠামো এবং কার্যক্রমের সঠিক ও হালনাগাদ তথ্য সংগ্রহ করা, যা উন্নয়ন পরিকল্পনা এবং নীতি নির্ধারণে সহায়ক হবে।

এই শুমারিতে কোন ধরনের তথ্য সংগ্রহ করা হবে?

শিল্প, সেবা, ক্ষুদ্র ব্যবসা, গৃহভিত্তিক উদ্যোগ এবং অনলাইন ব্যবসার তথ্যসহ বিদেশি কর্মীদের সম্পর্কিত তথ্য সংগ্রহ করা হবে।

শুমারির সময়সীমা কতদিন?

শুমারি শুরু হবে ১১ ডিসেম্বর ২০২৪ এবং চলবে ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪ পর্যন্ত।

শুমারিতে কোন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে?

GIS ম্যাপিং এবং MDM সফটওয়্যারসহ ডিজিটাল ট্যাব ব্যবহার করা হবে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

এড ব্লকার Extention/Addon দেখা যাচ্ছে!
আপনার ব্রাউজারে বিজ্ঞাপন বা এড ব্লকার Extention বা Plugin ব্যবহার করছেন।
আসলে, বিজ্ঞাপন দেখানোর মাধ্যমে আমাদের যা উপার্জন হয় তা আমাদের সাইটি চালানোর শক্তি ও উৎসাহ জাগায়। তাই অনুরোধ করছি, আপনার ব্রাউজারের Extention বা Addon থেকে আমাদের সাইটটি Whitelist করুন। ধন্যবাদ!